গোলচেহারার আয়না
- সাদিয়া সুলতানা
- Mar 21
- 1 min read

দেখতে দেখতে গোলচেহারার আয়নার কথা গ্রামের সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে। এর নেপথ্যে গোলনেহারের ভূমিকা আছে জেনেও গোলচেহারা চুপ করে থাকে। গোলনেহার যে নিজের ঢাউস পেটের মতো কোনো কথাই গোপন রাখতে পারে না তা ওর চেয়ে ভালো আর কে জানে। সে নিজের কথা পেটের ভেতরে গচ্ছিত রাখলেও আশৈশব ‘আল্লাহর কিরা...তোরেই বলতেছি আর কাউরে বলিস না কিন্তু’ বলে বোনকে শাসিয়ে একে তাকে অন্যের গোপন কথাসকল বলে বেড়ায়। এই দফাও এর ব্যতিক্রম হয়নি। যেদিন প্রথম গোলনেহার আয়নায় নিজেকে দেখেছে সেদিন সন্ধ্যার মধ্যে খবরটা এ-কান সে-কান হয়ে দশ বাড়ি গিয়ে পৌঁছেছে।
দুই তিন দিনের মাথায় টেপি-ঝেপির মা, মরিয়ম, মুন্নুজান, রোমেলাসহ গ্রামের দুচারজন পুরুষও এসে দাঁড়ায় এই বাড়ির দুয়ারে। কিন্তু উদ্ধত গোলচেহারার একই কথা, কাউকে আলাদা করে নয়, আয়নার জাদু সে জনসম্মুখেই দেখাবে।
খবরটা ছড়িয়ে গেলে জাদুকর মোহন গুম হওয়ার ঠিক ছয় মাস পর সাতকুড়ি গ্রামের মানুষগুলো আবার নড়েচড়ে বসে। পাড়া গাঁ অমন ঝিমিয়ে পড়লে দশ গ্রামের মধ্যে সাতকুড়ির উঁচু ভাবটি যেন আর থাকে না। ভাগ্যের ফেরে হারানো সেই গৌরব ফিরিয়ে আনার দায়িত্ব পড়ে জাদুকর মোহনের মেয়ে গোলচেহারার ওপর।
(উপন্যাস, ঈদসংখ্যা-শব্দঘর, ২০২৫)
Comments